প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল যে কোন দিন

দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত ফল চলতি সপ্তাহে প্রকাশ করা হতে পারে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্র প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ফল প্রকাশের পর নিয়োগ দেওয়ার কাজও দ্রুতই শুরু হবে বলে জানা গেছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজ শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত ফল ইতিমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। আগামীকাল রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সচিবালয়ে আসার কথা রয়েছে। আমরা তাঁকে বিষয়টি অবহিত করব। এরপর এ সপ্তাহের যেকোনো দিন ফল প্রকাশ করা হবে।’

 

 

প্রাথমিকের ফল প্রকাশ নিয়ে ধোঁয়াশা যেন কাটছে না। গত বৃহস্পতিবার কয়েকটি গণমাধ্যমে ফল প্রকাশের খবর প্রকাশ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ফল প্রকাশের খবর ছড়িয়ে পড়ে। এরপর অনেক পরীক্ষার্থী প্রথম আলো অফিসে ফোন করে খবরের সত্যতা জানতে চান। কিন্তু ওই দিন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে ফল প্রকাশের খবরের সত্যতা পাওয়া যায়নি।

সহকারী শিক্ষকের পদসংখ্যা বাড়িয়ে ৪৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগের কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে এটি আর হচ্ছে না। বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে অনুমোদিত পদেই নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ফল প্রকাশিত হবে, এ রকম কোনো বক্তব্য মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর থেকে দেওয়া হয়নি। যাঁরা খবর প্রকাশ করেছেন, তাঁরা কোথা থেকে এ তথ্য পেয়েছেন, তা আমাদের জানা নেই।’

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সূত্র ধরে এ গুজব ছড়িয়ে পড়তে পারে। পরীক্ষার্থীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের গুজবে কান না দেওয়ার জন্যও অনুরোধ করেন তিনি।

পদ বাড়ছে না
সহকারী শিক্ষকের পদসংখ্যা বাড়িয়ে ৪৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগের কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে এটি আর হচ্ছে না। বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে অনুমোদিত পদেই নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত প্রথম আলোকে বলেন, বিজ্ঞপ্তির অনুমোদিত পদেই নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। সে অনুসারে, ৩২ হাজার ৫৭৭ পদেই নিয়োগ দেওয়া হবে।

প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২০২০ সালে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তির অনুমোদিত পদ অনুসারে ৩২ হাজার ৫৭৭ পদে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার কথা থাকলেও এটি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। চলতি বছরের মার্চে মন্ত্রণালয়ের এক সভায় সাংবাদিকদের বলা হয়েছিল, ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নেওয়া হবে। অবসরের কারণে ১০ হাজারের বেশি পদ খালি হওয়ায় পদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

এ দিকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে চলমান নিয়োগপ্রক্রিয়ায় ৫৮ হাজার নিয়োগের দাবিতে মানববন্ধন করছেন চূড়ান্ত ফল প্রকাশের অপেক্ষায় থাকা প্রার্থীরা। রাজধানী ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায় মানবন্ধন করেছেন তাঁরা। এই দাবিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, অনুমোদনকৃত পদ ৩২ হাজার ৫৭৭টি হলেও করোনার দুই বছরে অবসরের কারণে ১০ হাজারের বেশি পদ শূন্য থাকায় ৫৮ হাজারের প্রার্থী নিয়োগ দেওয়ার কথা বলেছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদায়ী সচিব। কিন্তু এখন পদ সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে না। এটি করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত বেকারদের জন্য অত্যন্ত হতাশাজনক। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বলা আছে, শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। তাহলে কেন এই ১০-১৫ হাজার অবসরজনিত শূন্য পদে নিয়োগ নিশ্চিত করা হবে না। কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য পূরণে ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা-২০২০’-এ চলমান নিয়োগে পদসংখ্যা বৃদ্ধি আবশ্যক।

প্রাথমিকের ইতিহাসে বড় এই নিয়োগে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা তিন ধাপে নেওয়া হলেও চূড়ান্ত ফল একবারেই প্রকাশ করা হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, যেহেতু এটি একক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, তাই লিখিত ও মৌখিক—তিন ধাপে নেওয়া হলেও চূড়ান্ত ফল একসঙ্গে প্রকাশ করা হচ্ছে। তা না হলে সিনিয়র-জুনিয়র সমস্যা দেখা দিতে পারে।

এ নিয়োগে প্রথম ধাপের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ৪০ হাজার ৮৬২ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৫৩ হাজার ৫৯৫ এবং তৃতীয় ধাপে ৫৭ হাজার ৩৬৮ জন। চাকরির জন্য আবেদন করেছিলেন ১৩ লাখ ৯ হাজার ৪৬১ প্রার্থী।

About Ruma Khatun

আমি একজন সরকারি চাকরিজীবী। আমি শিক্ষার্থীদের জন্য অবসর সময়ে লেখা-লেখি করি। আমি সরকারি বি এল কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী।

Check Also

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় পাটিগণিতের সাজেশন ২০২৩

#প্রাথমিক_শিক্ষক_নিয়োগ_পরীক্ষার পাটিগণিত সাজেশন। এখান থেকে যে কোন ধাপের প্রাইমারি পরীক্ষায় ৮টি থেকে ৯টি হুবহু কমন …

Leave a Reply

Apply Online Here