জাল সনদে হাজারো শিক্ষক
শরীফুল আলম সুমন
শিক্ষকদের বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর। একজন
আদর্শ শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মাঝে যেমনি জ্ঞান বিতরণ করেন, তেমনি ন্যায়নীতি ও আদর্শেরও দীক্ষা দেন জাতি গঠনে তিনি সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারেন এজন্য শিক্ষককে নীতিনৈতিকতার দিক থেকে স্বচ্ছতার পরিচয়
দিতে হয়। কিন্তু শিক্ষকের নৈতিকতা প্রশ্নবিদ্ধ হলে তখন ?
চলতি বছরের জুন মাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) এক প্রতিবেদনে দেশে ১ হাজার ১০৮ জন এমন শিক্ষক পাওয়া গেছে যারা জাল সনদে চাকরি করছেন বছরে পর বছর ধরে। গত ১০ বছরে ২৪ হাজার ১২৩টি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে এসব জাল সনদধারী শিক্ষকদের শনাক্ত করে ডিআইএ।
ভুয়া সনদ দিয়ে তারা চাকরি করে যাচ্ছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। আর নিয়মিতভাবেই সরকারের কাছ থেকে বেতনও তুলে নিচ্ছেন। অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে চাকরি করে যাওয়া এসব শিক্ষকের এমপিও বাতিল এবং সরকারের কাছ থেকে নেওয়া
অর্থ ফেরত দেওয়ার সুপারিশও করেছে ডিআইএ। কিন্তু জাল সনদ ধরা পড়ার পরও অভিযুক্তদের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন শিক্ষক নিবন্ধনের সনদ ও কম্পিউটার সনদ জাল ১০ বছরে ১ হাজার ১০৮টি
জাল সনদ শনাক্ত
■ সরকারের ৫০ কোটি টাকা নিয়েছেন জাল সনদধারীরা বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে গড়িমসির অভিযোগ পাওয়া গেছে। আবার যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তাতেও রয়েছে দীর্ঘসূত্রতা। এতে জাল সনদ ধরা
পড়লেও কতজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এর হিসাব পাওয়া যায়নি।
কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার পাল্টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (সমাজবিজ্ঞান) হাজেরা খাতুন। তিনি ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি যোগদান করেন এবং ২০১২ সালের ১ নভেম্বর এমপিওভুক্ত হয়ে নিয়মিতভাবে সরকারি বেতন-ভাতা পেয়ে আসছেন। সম্প্রতি এই স্কুল পরিদর্শনে যান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) কর্মকর্তারা।
পরিদর্শনের সময় তিনি শিক্ষক নিবন্ধনের যে সনদটি দেখিয়েছেন তা বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে যাচাই করেন ডিআইএ কর্মকর্তারা। যাচাইয়ে দেখা যায়, এই সনদ ইস্যু করেনি এনটিআরসিএ সনদটি মূলত জাল।
এ বছরের ২২ এপ্রিল ডিআইএ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রতিবেদনে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি অবৈধভাবে নেওয়া ১২ লাখ ৩২ হাজার টাকা ফেরতের সুপারিশ করা হয়েছে।
পাল্টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কম্পিউটার শিক্ষক কল্পনা খাতুনের কম্পিউটার সনদও জাল পাওয়া গেছে। কারণ ওই শিক্ষক ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি, বগুড়া থেকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত নয়। ফলে তিনি যে সনদ নিয়েছেন তা বৈধ নয়।
সরকারি বেতন-ভাতা বাবদ ওই শিক্ষকের নেওয়া ১১ লাখ ২৩ হাজার ৮৫০ টাকা ফেরত দেওয়ার সুপারিশ করেছে ডিআইএ। কুষ্টিয়ার একই উপজেলার নাতুরিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক মো.