ডিসেম্বর মাসে হতে যাচ্ছে ১৭ তম নিবন্ধন পরীক্ষা। কলেজ নিবন্ধন পরীক্ষা ও এনটিআরসিএ নিয়ে যারা জানতে চান তাদের জন্য আজকের লেখা। আশা করি, এই লেখা পড়ার পর নিবন্ধন নিয়ে আর তেমন কোনো কনফিউশান থাকবে না। যথাসম্ভব অল্প কথায় লেখা শেষ করব।
~সুযোগ-সুবিধা: কলেজে যারা জব পাবেন তারা সরকারি হিসাবে ৯ গ্রেড। আপনি সরকার থেকে ২২০০০ টাকা বেসিক পাবেন। সাথে নামমাত্র কয়েকটা ভাতা পাবেন। সব মিলিয়ে বেতন ২৪/২৫ হাজার হতে পারে। কলেজ থেকে কিছু দিলে ২৬/২৭ হাজার হবে। প্রতিবছর বেসিকের ২০% বৈশাখী ভাতা ও ২৫% উৎসব ভাতা পাবেন। মোট বেসিকের ১০% আবার ফিউচারের জন্য কেটে রাখবে। যা অবসরের পর সরকারি অংশসহ এককালীন ৩৫/৪০ লাখ টাকার মত হবে। সরকারি জবের মত প্রতি বছর ৫% ইনক্রিমেন্ট হবে। কিছু কিছু ভালো কলেজ আছে যেগুলোতে জব হলে আপনি সরকারি অংশের সাথে সরকারি ৯ গ্রেডের অন্যান্য ভাতা কলেজ থেকে পাবেন। তখন বেতন হবে ৩৫/৩৬ হাজারের মত।
~পদোন্নতি: ৮ বছর পর কলেজের ৫০% প্রভাষক সহকারী অধ্যাপক হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবে। পদোন্নতিতে সিনিয়রিটিকে প্রাধান্য দেয়া হয়। সহকারী অধ্যাপক ৬ গ্রেড। আশা করা যায় সামনে সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক হওয়ার নিয়ম চালু হবে। যেহেতু বর্তমানে কমিটি নিয়োগ বাতিল। এমনিতে বর্তমানে প্রিন্সিপাল হওয়া যায়। এটি ৪ গ্রেডের সমমান। বেসিক ৫০ হাজার।
~বর্তমান নিয়োগ পদ্ধতি: বিসিএসের মত তিন ধাপে হবে। রিটেন পাশ করা তুলনামূলক কঠিন। কারণ কলেজে শূন্যপদ অনেক কম থাকে। তিন ধাপে পাশ করার পর আপনাকে আপনার বিষয়ের জাতীয় মেধা তালিয়ায় যুক্ত করবে এনটিআরসিএ। ধরেন, ১-১৬ তম নিবন্ধনে কলেজে পদার্থবিজ্ঞানের নিবন্ধন আছে মোট ৫ হাজার জনের। আর যার নান্বার ৪৫ সে ৫০০০ তম। আর যে প্রথম তার নাম্বার ৮৫। এবার আপনি যদি ১৭ তমে নিবন্ধনে ৮৬ পান তাহলে আপনি জাতীয় মেধা তালিকায় ১ম হিসাবে যুক্ত হবে। অতএব, গণবিজ্ঞপ্তিতে পদার্থবিজ্ঞানের ১ টি পদ শুন্য থাকলেও আপনার জব হবে।
~গণবিজ্ঞপ্তি: এনটিআরসিএ সারা দেশের এমপিওভুক্ত (monthly pay order) কলেজ থেকে শুন্যপদ সংগ্রহ করে গণবিজ্ঞপ্তি দেয়। যারা নিবন্ধন পাশ করে মেধা তালিকায় যুক্ত হয়েছে শুধু তারাই জবের জন্য আবেদন করতে পারে। সেখানে সাবজেক্ট চয়েজের মত কলেজ চয়েজ দেয়া যাবে। ধরেন, তেজগাঁও কলেজে পদার্থবিজ্ঞানের ১ টা পদ শুন্য, নরসিংদীতে ১ টা, কুমিল্লাতে ১ টা। এভাবে পদার্থবিজ্ঞানের মোট ৩০ টা শূন্যপদ সারা দেশে। এখন মেধা তালিকায় যে প্রথম সে যেই কলেজ ফার্স্ট চয়েজ দিবে সেটাতেই তার জব হবে।
~আগের নিয়োগপদ্ধতি: ২০১৫ সালের আগে কমিটির মাধ্যমে জেলাভিত্তিক নিয়োগ হত। মেধাতালিকা ছিল না। জাস্ট নিবন্ধন সনদ দেখিয়ে কমিটির মাধ্যমে নাম মাত্র এক্সামে জব হত। দূর্নীতি ছিল, স্বজনপ্রীতি ছিল। এখন একদমই দূর্নীতি নাই। আপনার পছন্দমতো জেলা ও কলেজে জব নিতে পারবেন যদি মেধাতালিকায় এগিয়ে থাকেন। এনটিআরসিএ যেহেতু মাউশির অনুমতি ছাড়া কিছু করতে পারে না তাই তাদের কাজ কিছুটা স্লো।
~বেতন কীভাবে পাবেন: প্রাথমিক রেজাল্টের পর বর্তমানে পুলিশ ভেরিফিকেশন যুক্ত করেছে। কিন্তু লাস্ট দুইটা বিজ্ঞপ্তিতে ভেরিফিকেশন চলমান রেখেই চূড়ান্ত সুপারিশ করা হয়েছে। চূড়ান্ত নিয়োগের পর আপনাকে এমপিওভুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে। কারো কারো এমপিওভুক্ত হতে দেরী হলে জয়েনিং এর ডেইট থেকে হিসাব করে সব টাকা এরিয়ার পাবেন। আগে এরিয়ারের সিস্টেম ছিল না। সামনে যোগদান থেকে অটোমেটেড এমপিওভুক্ত করার কাজ চলমান। তখন হেসেল অনেকটা কমে যাবে।
~ ক্লাস: স্কুল এন্ড কলেজে লেকচারার পদে জয়েন করলে স্কুলে ক্লাস নেয়া লাগতে পারে। উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রি কলেজে জয়েন করলে দিনে সর্বোচ্চ ২ টা ক্লাস।
ভুল হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি। আর কোনো প্রশ্ন থাকলে ইনবক্স বা কমেন্ট করবেন। ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকুন।